আলোচনা-প্রসঙ্গে : উনবিংশ খন্ডের কিছু অংশ

শ্রীশ্রীঠাকুর সকালে বড়াল-বাংলোর ঘরে উপবিষ্ট।

হাউজারম্যানদা, প্রবোধদা (মিত্র), কান্তিদা (বিশ্বাস), রাজেনদা (মজুমদার), প্রকাশদা (বসু) প্রমুখ কাছে আছেন।

কথাপ্রসঙ্গে শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন- ভারতীয় সমাজতন্দ্রের একটা প্রধান জিনিস ছিল সামাজিক শাসন। লোকেই লোকের শাসন করত। কোর্টে যাওয়া লাগত কম। মানুষ এমনতর আচরণ করতে সাহস পেত না, যে দৃষ্টান্তে সমাজের লোকের খারাপ হ’তে পারে। তা’ করলেই সকলে মিলে ঠেসে ধরত। কিছুতেই রেহাই দিত না। মানুষ যত প্রবৃত্তি-পরতন্ত্রী হ’য়ে উঠল, ততই সামাজিক শাসনের বিরোধিতা করতে লাগল।

হাউজারম্যানদা- মানুষের ব্যক্তিগত স্বাধীনতা তো থাকবে?

শ্রীশ্রীঠাকুর- তোমার স্বাধীনতা আছে বাঁচাবাড়ার পথে চলার। কিন্তু তুমি যদি আত্মহত্যা কর, তাহ’লে আইনতঃ তোমাকে শাস্তি পেতে হবে। আবার, তুমি যদি অন্যের ক্ষতি কর, মানুষ তোমাকে চেপে ধরবে। তোমার ভালোর জন্য যদি তুমি পুরস্কৃত হও, তাহ’লে তোমার মন্দের জন্য তুমি তিরস্কৃত হবে না কেন?

সুরেনদা (ঘোষাল) কিছুদিন আগে এক ভদ্রলোকের গচ্ছিত কুড়িটি টাকা খরচ ক’রে ফেলেন। সুরেনদা সেই কথা শ্রীশ্রীঠাকুরকে জানানোতে তিনি তাকে ভিক্ষা ক’রে পঁচিশটা টাকা তুলতে বলেন। কয়েকদিন ধ’রে উক্ত পঁচিশ টাকা ভিক্ষা ক’রে এনে তিনি শ্রীশ্রীঠাকুরকে বললেন- ভিক্ষা করা হয়ে গেছে, এখন কী করব?

শ্রীশ্রীঠাকুর- কুড়ি টাকা যার ভেঙেছিস তাকে দিবি। আর পাঁচ টাকা দিয়ে জনা পাঁচেক গুরুভাইকে খাইয়ে দিবি। আর তাদের কাছে খুলে বলবি, আমি অমুকের এই টাকা ভেঙ্গে ফেলেছিলামÑ আশীর্দ্বাদ করুন ভবিষ্যতে যেন আমি কখনও এমন কাজ না করি।

আলোচনা-প্রসঙ্গে (উনবিংশ খন্ড) পৃষ্ঠা- ১৪০-১৪১ : ২৩ শে বৈশাখ, ১৩৫৭, শনিবার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *