সমাচার প্রতিবেদন :
শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ১৩৬তম আবির্ভাব-বর্ষ-স্মরণ মহোৎসব মঙ্গলবার শেষ হচ্ছে।তিন দিনব্যাপী এই মহোৎসবে লাখো ভক্তের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছিল পাবনার হিমাইতপুর সৎসঙ্গ প্রাঙ্গণ। পরিণত হয়েছিল বিভিন্ন শ্রেণি পেশার এবং বয়সের ভক্তবৃন্দের মিলন মেলায়। দেশের এবং দেশের বাইরের ভক্তবৃন্দ এক সঙ্গে মিশে গিয়েছিল।
সোমবার দ্বিতীয়দিন বিভিন্ন বয়সের ভক্তবৃন্দ আবির খেলায় অংশ নেন। প্রাণের ঠাকুরের জন্মস্থানের ধুলির স্পর্শ পেতে দেশ-বিদেশ থেকে ছুটে এসেছেন অগণিত ভক্ত। উৎসব প্রাঙ্গণে যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। উৎসব ঘিরে বসেছে মেলা।
উৎসবের দ্বিতীয়দিন সোমবার প্রধান অতিথি হিসেবে পাবনা-৫ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক প্রিন্স উৎসব প্রাঙ্গণ পরিদর্শন করেন। এ সময় পাবনা পৌর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মামুন, ১৫ নং ওয়ার্ড কমিশনার শাহীন শেখ ও আশ্রম কর্তৃপক্ষ উপস্থিত ছিলেন।
সন্ধ্যায় সমবেত প্রার্থনা শেষে শুরু হয় ধর্ম সভায়।
সৎসঙ্গ পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক শ্রী গোপীনাথ কুন্ডুর সভাপত্বি বক্তব্য রাখেন, ভারত থেকে আগত প্রলয় মজুমদার, প্রীতি গোপাল দত্ত রায়, সম্পদ নারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, বাংলাদেশের যুগল চন্দ্র ঘোষ, সজীব কুমার সিংহ রুবেল, মদন দাস, প্রশান্ত দেবনাথ, চন্দনময় নন্দী টিটু, এ্যাডভোকেট চিরন্তন মল্লিক, সুদেব ঘোষ, অধ্যাপক সমাপ্ত সাহা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সৎসঙ্গ পরিচালনা কমিটির যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৌমিত্র মজুমদার। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ড. নরেশ মধু, হিরন্ময় ঘোষ, বিশ্বজিৎ সাহা।
দ্বিতীয় দিন দেশের বিশিষ্ট শিল্পী সাগর দেওয়ান, রথীন মিত্র ভক্তিমূলক বিভিন্ন গানে ভক্তদের মোহিত করেন। গভীর রাত পর্যন্ত চলে এই লোকরঞ্জন অনুষ্ঠান।
আয়োজকরা জানান, তিনদিনের মহোৎসবের অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে ঊষালগ্নে মাঙ্গলিকী, তারকব্রহ্ম নাম সংকীর্তন, সকাল-সন্ধ্যা বিরতিহীন নাম-ধ্যান, সমবেত প্রার্থনা, সদ্গ্রন্থাদি পাঠ, ভক্তি সংগীত, পুরুষোত্তমের আবির্ভাব লগ্নের স্মতিচারণ, পুষ্পাঞ্জলি, প্রদীপ প্রজ্জ্বলন, শঙ্খধ্বনি, বন্দে পুরুষোত্তমম্ ধ্বনি ও উলুধ্বনি, বিশ্ব কল্যাণে বিশেষ প্রার্থনা, পুরুষোত্তম প্রণাম ও অর্ঘ্যাঞ্জলি নিবেদন।
এছাড়া জাতীয় সঙ্গীত সহযোগে জাতীয় পতাকা ও মাতৃবন্দনা সহযোগে সৎসঙ্গ পতাকা উত্তোলন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের দোলযাত্রা, লীলা কীর্তন, শ্রী শ্রী গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর ৫৩৯ তম আবির্ভাব দিবসের পুণ্যলগ্নের স্মৃতিচারণ, শ্রী শ্রী ঠাকুরের জন্মস্থান প্রদক্ষিণ ও শ্রী শ্রী ঠাকুরের প্রতিকৃতিসহ আশ্রম অঙ্গন প্রদক্ষিণ, কিশোর মেলা, ঋত্বিক সম্মেলন, মাতৃ সম্মেলন, যুব সম্মেলন, প্রার্থনান্তে ধর্মসভা, আনন্দ বাজারে মহাপ্রসাদ বিতরণ, রাত্রে লোকরঞ্জন অনুষ্ঠান।
এদিকে লাখো ভক্তের পদচারণায় মুখরিত উৎসব প্রাঙ্গণ। সবৃক্ষণ শঙ্খধ্বনি, বন্দে পুরুষোত্তমম্ ধ্বনি ও উলুধ্বনি ভেসে আসছে বাতাসে। তরুণ-তরুণীসহ বিভিন্ন বয়সের ভক্তবৃন্দ আবির লেখায় মেতে উঠেছিলেন দোল-পূর্ণিমার দিন সকাল থেকেই।